ঢাকা ০১:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চালের বাজারে অস্থিরতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০০:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৪২০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কয়েক মাস ধরেই চালের বাজার অস্থির। দুটি বন্যা ও ব্লাস্ট রোগে দেশে ২০ লাখ টনের মতো চালের ক্ষতি হয়েছে বলে সরকারি হিসাবেই বলা হয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই ঘাটতি দেখা দেয়। ঘাটতি পূরণে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। দুই ধাপে চালের আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে আনা হয়। এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে ছয় লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছে। আরো ১৭ লাখ টন চাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে। তার পরও বাজারে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বেসরকারি পর্যায়ে যে চাল আমদানি হয়েছে তাতে কোনো সংকট হওয়ার কথা নয়। অনেকের ধারণা, দেশে যথেষ্ট চাল আছে কিন্তু সেই চাল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মজুদ রেখেছে। সরকারের মজুদ কমে যাওয়ায় চালের বাজারের পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে।

চালের বাজারে এই অস্থিরতার পেছনে আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী ও মিলারদের হাত রয়েছে বলেও অনেকের ধারণা।

অভিযোগ উঠেছে, চালের বাজার অস্থিতিশীল করতে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। সিন্ডিকেটটি ব্যবসায়ীদের মধ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের মিনিস্ট্রি অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বাক্ষরবিহীন একটি ভুয়া চিঠি বন্দর এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মধ্যে প্রচার করেছে। চিঠির সূত্র ধরে পরে আমদানিকারকরা চালের মূল্য কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছেন। চিঠির গুজবে বাজারে চালের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। আবার চাল মজুদের বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ী ও মিলাররা একে অন্যকে দোষারোপ শুরু করেছেন। মিলাররা বলছেন, চালের বড় সংকট থাকায় সরবরাহ কম। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল থাকার পরও চাহিদা অনুযায়ী মিল থেকে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। বাস্তবতা হচ্ছে, বাজারে চালের দাম কমছে না। বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চালের বাজারে আজকের যে অস্থিরতা, তা এক দিনে তৈরি হয়নি। সংকটের আভাস আগে থেকে দিলে বাজারে এ অস্থিরতা তৈরি হতো না। বোরো সংগ্রহে ব্যর্থ হওয়ার পরই সংকট মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিলে চালের বাজারে কোনো সমস্যা হতো না। আমদানির ক্ষেত্রে সরকার শুল্ক কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আরো আগে নেওয়া যেত বলে বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা থেকে দ্রুত উত্তরণের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি পর্যায়ে যে চাল আমদানি করা হয়েছে, তা দিয়ে অবিলম্বে বিকল্প বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। দরিদ্রদের জন্য ওএমএস চালু হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের বিড়ম্বনা দূর করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা ভেবে দেখা দরকার। এ ক্ষেত্রে টিসিবি কি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে? চাল মজুদের যে অভিযোগ উঠেছে, তাও খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চালের বাজারে অস্থিরতা

আপডেট টাইম : ১২:০০:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কয়েক মাস ধরেই চালের বাজার অস্থির। দুটি বন্যা ও ব্লাস্ট রোগে দেশে ২০ লাখ টনের মতো চালের ক্ষতি হয়েছে বলে সরকারি হিসাবেই বলা হয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই ঘাটতি দেখা দেয়। ঘাটতি পূরণে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। দুই ধাপে চালের আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে আনা হয়। এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে ছয় লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছে। আরো ১৭ লাখ টন চাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে। তার পরও বাজারে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বেসরকারি পর্যায়ে যে চাল আমদানি হয়েছে তাতে কোনো সংকট হওয়ার কথা নয়। অনেকের ধারণা, দেশে যথেষ্ট চাল আছে কিন্তু সেই চাল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মজুদ রেখেছে। সরকারের মজুদ কমে যাওয়ায় চালের বাজারের পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে।

চালের বাজারে এই অস্থিরতার পেছনে আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী ও মিলারদের হাত রয়েছে বলেও অনেকের ধারণা।

অভিযোগ উঠেছে, চালের বাজার অস্থিতিশীল করতে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। সিন্ডিকেটটি ব্যবসায়ীদের মধ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের মিনিস্ট্রি অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বাক্ষরবিহীন একটি ভুয়া চিঠি বন্দর এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মধ্যে প্রচার করেছে। চিঠির সূত্র ধরে পরে আমদানিকারকরা চালের মূল্য কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছেন। চিঠির গুজবে বাজারে চালের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। আবার চাল মজুদের বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ী ও মিলাররা একে অন্যকে দোষারোপ শুরু করেছেন। মিলাররা বলছেন, চালের বড় সংকট থাকায় সরবরাহ কম। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল থাকার পরও চাহিদা অনুযায়ী মিল থেকে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। বাস্তবতা হচ্ছে, বাজারে চালের দাম কমছে না। বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চালের বাজারে আজকের যে অস্থিরতা, তা এক দিনে তৈরি হয়নি। সংকটের আভাস আগে থেকে দিলে বাজারে এ অস্থিরতা তৈরি হতো না। বোরো সংগ্রহে ব্যর্থ হওয়ার পরই সংকট মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিলে চালের বাজারে কোনো সমস্যা হতো না। আমদানির ক্ষেত্রে সরকার শুল্ক কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আরো আগে নেওয়া যেত বলে বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা থেকে দ্রুত উত্তরণের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি পর্যায়ে যে চাল আমদানি করা হয়েছে, তা দিয়ে অবিলম্বে বিকল্প বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। দরিদ্রদের জন্য ওএমএস চালু হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের বিড়ম্বনা দূর করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা ভেবে দেখা দরকার। এ ক্ষেত্রে টিসিবি কি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে? চাল মজুদের যে অভিযোগ উঠেছে, তাও খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।